আল্লাহর ৯৯ নাম - আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা অর্থ সহ ফজিলত
আল্লাহর ৯৯ নাম - আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা অর্থ সহ ফজিলত
আল্লাহর ৯৯টি নাম (আসমা-উল-হুসনা) ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো আল্লাহর বিভিন্ন গুণাবলী এবং মহিমা প্রকাশ করে। আল্লাহর এই নামগুলো জপ করার মাধ্যমে একজন মুসলিমের ঈমান বৃদ্ধি পায়, মন শান্ত থাকে এবং আল্লাহর দয়া ও করুণা লাভ করা যায়। এখানে আল্লাহর ৯৯টি নাম, বাংলা অর্থ এবং তাদের ফজিলত (বরকত) বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
আল্লাহর ৯৯টি নাম স্মরণ করা এবং তাদের অর্থ ও ফজিলত জানা আমাদের জীবনে শান্তি, সফলতা, আত্মবিশ্বাস এবং সাহায্য এনে দেয়। আল্লাহর এসব নামের মাধ্যমে আমাদের প্রার্থনা এবং দোয়া শোনা হয়, এবং আমাদের জীবন সহজ ও সুন্দর হয়।
আল্লাহর ৯৯ নামের তালিকা
- আল্লাহ (Allah) – সর্বশক্তিমান স্রষ্টা
- আল-রহমান (Ar-Rahman) – পরম দয়ালু
- আল-রহিম (Ar-Rahim) – চির করুণাময়
- আল-মালিক (Al-Malik) – রাজাধিরাজ
- আল-কুদ্দুস (Al-Quddus) – পরম পবিত্র
- আস-সালাম (As-Salam) – শান্তির উৎস
- আল-মু'মিন (Al-Mu'min) – বিশ্বাসের রক্ষক
- আল-মুহাইমিন (Al-Muhaymin) – রক্ষাকারী
- আল-আজিজ (Al-Aziz) – পরাক্রমশালী
- আল-জাব্বার (Al-Jabbar) – সর্বশক্তিমান
- আল-মুতাকাব্বির (Al-Mutakabbir) – মহিমান্বিত
- আল-খালিক (Al-Khaliq) – সৃষ্টিকর্তা
- আল-বারি (Al-Bari') – উদ্ভাবক
- আল-মুসাওয়ার (Al-Musawwir) – আকৃতি দানকারী
- আল-গাফফার (Al-Ghaffar) – পরম ক্ষমাশীল
- আল-কাহহার (Al-Qahhar) – চূড়ান্ত বিজয়ী
- আল-ওয়াহহাব (Al-Wahhab) – মহান দানকারী
- আর-রাযযাক (Ar-Razzaq) – জীবিকা দাতা
- আল-ফাত্তাহ (Al-Fattah) – বিজয়দাতা
- আল-আলিম (Al-Alim) – সর্বজ্ঞ
- আল-কাবিদ (Al-Qabid) – সংকুচিতকারী
- আল-বাসিত (Al-Basit) – প্রসারিতকারী
- আল-খাফিদ (Al-Khafid) – অবনতকারী
- আর-রাফি' (Ar-Rafi') – উন্নতকারী
- আল-মু'ইয (Al-Mu'izz) – সম্মান দানকারী
- আল-মুযিল (Al-Mudhill) – অপমানকারী
- আস-সামি' (As-Sami') – সর্বশ্রোতা
- আল-বাসির (Al-Basir) – সর্বদ্রষ্টা
- আল-হাকাম (Al-Hakam) – চূড়ান্ত বিচারক
- আল-আদল (Al-Adl) – পরম ন্যায়বিচারক
- আল-লতিফ (Al-Latif) – পরম দয়ালু
- আল-খবির (Al-Khabir) – পরম অবহিত
- আল-হালিম (Al-Halim) – ধৈর্যশীল
- আল-আজিম (Al-Azim) – মহান
- আল-গফুর (Al-Ghafoor) – অতিশয় ক্ষমাশীল
- আশ-শাকুর (Ash-Shakoor) – পরম কৃতজ্ঞ
- আল-আলী (Al-Aliyy) – পরম উচ্চ
- আল-কবির (Al-Kabir) – মহান
- আল-হাফিজ (Al-Hafiz) – রক্ষাকারী
- আল-মুকিত (Al-Muqit) – পালনকর্তা
- আল-হাসিব (Al-Hasib) – যথেষ্ট
- আল-জালিল (Al-Jalil) – মহিমান্বিত
- আল-করিম (Al-Karim) – মহানুভব
- আর-রাকিব (Ar-Raqib) – তত্ত্বাবধায়ক
- আল-মুজিব (Al-Mujib) – প্রতিউত্তরকারী
- আল-ওয়াসি' (Al-Wasi') – সর্বব্যাপী
- আল-হাকিম (Al-Hakim) – পরম জ্ঞানী
- আল-ওয়াদুদ (Al-Wadud) – পরম প্রেমময়
- আল-মাজিদ (Al-Majid) – মহিমান্বিত
- আল-বা’ইস (Al-Ba'ith) – পুনরুত্থানকারী
- আশ-শাহিদ (Ash-Shahid) – সাক্ষী
- আল-হক (Al-Haqq) – পরম সত্য
- আল-ওয়াকিল (Al-Wakil) – অভিভাবক
- আল-কাওয়ী (Al-Qawiyy) – শক্তিশালী
- আল-মাতিন (Al-Matin) – দৃঢ়
- আল-ওয়ালিয়্য (Al-Waliyy) – সহায়ক
- আল-হামিদ (Al-Hamid) – প্রশংসার যোগ্য
- আল-মুহসি (Al-Muhsi) – সবকিছুর গণনাকারী
- আল-মুবদি' (Al-Mubdi') – সৃষ্টিকর্তা
- আল-মুইদ (Al-Mu'id) – পুনরুজ্জীবনকারী
- আল-মুহয়ি (Al-Muhyi) – জীবনদাতা
- আল-মুমিত (Al-Mumit) – মৃত্যুদাতা
- আল-হাইয়্য (Al-Hayy) – চিরঞ্জীব
- আল-কাইয়্যুম (Al-Qayyum) – চিরস্থায়ী
- আল-ওয়াজিদ (Al-Wajid) – অস্তিত্বশীল
- আল-মাজিদ (Al-Majid) – মহিমান্বিত
- আল-ওয়াহিদ (Al-Wahid) – একক
- আল-আহাদ (Al-Ahad) – একক
- আস-সামাদ (As-Samad) – পরম নির্ভরযোগ্য
- আল-কাদির (Al-Qadir) – সর্বশক্তিমান
- আল-মুকাদ্দির (Al-Muqtadir) – পরম ক্ষমতাশালী
- আল-মুকাদ্দিম (Al-Muqaddim) – অগ্রদাতা
- আল-মুআখির (Al-Mu'akhkhir) – পিছনে রাখা
- আল-আউয়াল (Al-Awwal) – প্রথম
- আল-আখির (Al-Akhir) – শেষ
- আয-জাহির (Az-Zahir) – প্রকাশিত
- আল-বাদিন (Al-Batin) – অদৃশ্য
- আল-ওয়ালি (Al-Wali) – অভিভাবক
- আল-মুতা'আলি (Al-Muta'ali) – সর্বোচ্চ
- আল-বার (Al-Barr) – অনুগ্রহশীল
- আত-তাওয়াব (At-Tawwab) – তওবা গ্রহণকারী
- আল-মুনতাকিম (Al-Muntaqim) – প্রতিশোধ গ্রহণকারী
- আল-আফুউ (Al-Afuww) – ক্ষমাশীল
- আর-রউফ (Ar-Ra'uf) – অতিশয় দয়ালু
- মালিক আল-মুলক (Malik al-Mulk) – রাজ্যের অধিকারী
- যুল-জালাল ওয়া আল-ইকরাম (Dhul-Jalal wal-Ikram) – মহিমা ও সম্মানের অধিকারী
- আল-মুকসিত (Al-Muqsit) – সুবিচারক
- আল-জামি’ (Al-Jami') – একত্রিতকারী
- আল-গানী (Al-Ghani) – অমুখাপেক্ষী
- আল-মুগনী (Al-Mughni) – অভাবমুক্তকারী
- আল-মানি' (Al-Mani') – বাধা দানকারী
- আদ-দার (Ad-Darr) – ক্ষতিসাধনকারী
- আন-নাফি' (An-Nafi') – কল্যাণকারী
- আন-নূর (An-Nur) – আলোক
- আল-হাদি (Al-Hadi) – পথপ্রদর্শক
- আল-বদি' (Al-Badi') – অনন্য সৃষ্টিকর্তা
- আল-বাকী (Al-Baqi) – অনন্ত
- আল-ওয়ারিস (Al-Warith) – উত্তরাধিকারী
- আর-রশিদ (Ar-Rashid) – সঠিক পথ প্রদর্শন
আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা অর্থ সহ ফজিলত
১. আল্লাহ (Allah)
অর্থ: একমাত্র উপাস্য, স্রষ্টা।
ফজিলত: এই নামের জিকিরে আল্লাহর নৈকট্য পাওয়া যায় এবং সকল বিপদ থেকে মুক্তি লাভ হয়।
২. আল-রহমান (Ar-Rahman)
অর্থ: পরম দয়ালু।
ফজিলত: এটি জপ করলে আল্লাহর মহান রহমত লাভ হয় এবং ব্যক্তিগত জীবনে শান্তি আসে।
৩. আল-রহিম (Ar-Rahim)
অর্থ: চিরন্তন দয়ালু।
ফজিলত: আল্লাহর চিরস্থায়ী দয়া লাভ হয় এবং সকল সমস্যার সমাধান সহজ হয়।
৪. আল-মালিক (Al-Malik)
অর্থ: রাজাধিরাজ, স্রষ্টার রাজত্ব।
ফজিলত: আল্লাহর রাজত্বের কাছে সবকিছু মেনে চলতে সাহায্য করে।
৫. আল-কুদ্দুস (Al-Quddus)
অর্থ: পবিত্র, মহান।
ফজিলত: অন্তরের পবিত্রতা বৃদ্ধি পায় এবং গুনাহ মাফের আশ্বাস পাওয়া যায়।
৬. আস-সালাম (As-Salam)
অর্থ: শান্তির উৎস।
ফজিলত: আল্লাহর জিকিরে শান্তি পাওয়া যায় এবং জীবনে নিরাপত্তা আসে।
৭. আল-মু'মিন (Al-Mu'min)
অর্থ: বিশ্বাসের রক্ষক।
ফজিলত: ঈমানের শক্তি বৃদ্ধি হয় এবং আল্লাহর রহমত লাভ হয়।
৮. আল-মুহাইমিন (Al-Muhaymin)
অর্থ: নিরাপত্তা প্রদানকারী।
ফজিলত: আল্লাহর নিরাপত্তা পেলে সব শত্রু থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
৯. আল-আজিজ (Al-Aziz)
অর্থ: পরাক্রমশালী, দুর্ভেদ্য।
ফজিলত: এই নামের জিকির করলে শক্তি ও সাহস বৃদ্ধি পায়।
১০. আল-জাব্বার (Al-Jabbar)
অর্থ: শক্তিশালী, অসীম ক্ষমতাধর।
ফজিলত: কঠিন পরিস্থিতিতে আল্লাহর সাহায্য প্রাপ্তি হয়।
২০ ফাহিমা Fahima বোধশক্তি সম্পন্ন
২১ ফিরদৌস Firdaus স্বর্গ
১১. আল-মুতাকাব্বির (Al-Mutakabbir)
অর্থ: মহিমান্বিত, গর্বিত।
ফজিলত: অহংকার দূর হয় এবং আল্লাহর শান-শওকত স্মরণ হয়।
১২. আল-খালিক (Al-Khaliq)
অর্থ: স্রষ্টা।
ফজিলত: সৃষ্টির প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা বাড়ে।
১৩. আল-বারি (Al-Bari')
অর্থ: সৃষ্টিকর্তা।
ফজিলত: আল্লাহর অসীম সৃষ্টির রহস্য উপলব্ধি হয় এবং বুদ্ধি বৃদ্ধি পায়।
১৪. আল-মুসাওয়ার (Al-Musawwir)
অর্থ: আকৃতি দানকারী।
ফজিলত: সৃষ্টির সৌন্দর্য উপলব্ধি করার মাধ্যমে আল্লাহর মহিমা উপলব্ধি হয়।
১৫. আল-গাফফার (Al-Ghaffar)
অর্থ: পরম ক্ষমাশীল।
ফজিলত: গুনাহ মাফ হয় এবং আল্লাহর করুণা লাভ করা যায়।
১৬. আল-কাহহার (Al-Qahhar)
অর্থ: পরাক্রমশালী, বিজয়ী।
ফজিলত: জীবনের প্রতিকূলতা ও সমস্যা কাটিয়ে ওঠার শক্তি লাভ হয়।
১৭. আল-ওয়াহহাব (Al-Wahhab)
অর্থ: দানশীল।
ফজিলত: আল্লাহর অসীম দান পাওয়া যায় এবং দানের প্রতি কৃতজ্ঞতা বাড়ে।
১৮. আর-রাযযাক (Ar-Razzaq)
অর্থ: জীবিকা দাতা।
ফজিলত: জীবনে রিজিকের বরকত আসে এবং মনোবল বৃদ্ধি পায়।
১৯. আল-ফাত্তাহ (Al-Fattah)
অর্থ: বিজয় দানকারী।
ফজিলত: কঠিন সমস্যার সমাধান এবং জীবনে সফলতা লাভ করা যায়।
২০. আল-আলিম (Al-Alim)
অর্থ: সর্বজ্ঞ।
ফজিলত: আল্লাহর অগাধ জ্ঞানকে জানার আগ্রহ বৃদ্ধি পায় এবং বুদ্ধি বৃদ্ধি পায়।
২১. আল-কাবিদ (Al-Qabid)
অর্থ: সংকুচিতকারী।
ফজিলত: কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ এবং পরীক্ষার সময় আল্লাহর সহায়তা পাওয়া যায়।
২২. আল-বাসিত (Al-Basit)
অর্থ: প্রসারিতকারী।
ফজিলত: জীবনে রিজিকের উন্নতি এবং সুযোগ বৃদ্ধি পায়।
২৩. আল-খাফিদ (Al-Khafid)
অর্থ: অবনতকারী।
ফজিলত: অহংকার থেকে মুক্তি এবং বিনয় অর্জিত হয়।
২৪. আর-রাফি' (Ar-Rafi')
অর্থ: উন্নতকারী।
ফজিলত: সম্মান এবং মর্যাদা বৃদ্ধি হয়, শ্রেষ্ঠত্ব লাভ হয়।
২৫. আল-মু'ইজ (Al-Mu'izz)
অর্থ: সম্মান দানকারী।
ফজিলত: আল্লাহর দানে মর্যাদা ও সম্মান বৃদ্ধি পায়।
২৬. আল-মুদ্বিল (Al-Mudhill)
অর্থ: অপমানকারী।
ফজিলত: অহংকার ও গর্ব দূর করার জন্য সহায়ক।
২৭. আস-সামি' (As-Sami')
অর্থ: সর্বশ্রোতা।
ফজিলত: আল্লাহ সব শোনেন এবং এই বিশ্বাসে শান্তি অনুভূত হয়।
২৮. আল-বাসির (Al-Basir)
অর্থ: সর্বদ্রষ্টা।
ফজিলত: আল্লাহর দৃষ্টি সবখানে থাকে, যা শান্তি এবং আত্মবিশ্বাস প্রদান করে।
২৯. আল-হাকাম (Al-Hakam)
অর্থ: বিচারক।
ফজিলত: সুবিচারের প্রতি আস্থা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সহায়ক।
৩০. আল-আদল (Al-Adl)
অর্থ: ন্যায়পরায়ণ।
ফজিলত: আল্লাহর ন্যায়পরায়ণতার উপর আস্থা ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা করার মানসিকতা।
৩১. আল-লতিফ (Al-Latif)
অর্থ: পরম নরম, দয়ালু।
ফজিলত: আল্লাহর সূক্ষ্ম দয়া অনুভব করা যায় এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়।
৩২. আল-খাবির (Al-Khabir)
অর্থ: সবকিছু জানেন এমন।
ফজিলত: জীবনের অজানা ব্যাপারগুলো জানা সহজ হয়।
৩৩. আল-হালিম (Al-Halim)
অর্থ: সহনশীল, দয়ালু।
ফজিলত: আল্লাহর সহনশীলতা উপলব্ধি করা হয় এবং বিপদের মধ্যে ধৈর্য ধরে থাকা যায়।
৩৪. আল-আজিম (Al-Azim)
অর্থ: মহা মহান।
ফজিলত: আল্লাহর মহানত্ব উপলব্ধি হয়, যার ফলে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।
৩৫. আল-গাফুর (Al-Ghafur)
অর্থ: পরম ক্ষমাশীল।
ফজিলত: গুনাহ মাফ হয় এবং আল্লাহর করুণা লাভ হয়।
৩৬. আল-শাকুর (Ash-Shakur)
অর্থ: পরম কৃতজ্ঞ।
ফজিলত: আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সন্তুষ্টি বৃদ্ধি পায়।
৩৭ আল-আলী (Al-Aliyy)
অর্থ: পরম উচ্চ
ফজিলত: আল্লাহর এই নামটি স্মরণ করলে মানুষ তার আত্মসম্মান ও আত্মবিশ্বাসে উজ্জীবিত হয়।
৩৮. আল-কাবির (Al-Kabir)
অর্থ: মহান
ফজিলত: আল্লাহ মহান এবং তার মহিমা অশেষ। এই নামটি স্মরণ করলে জীবনে সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
৩৯. আল-হাফিজ (Al-Hafiz)
অর্থ: রক্ষাকারী
ফজিলত: আল্লাহ তার সৃষ্টির প্রতি রক্ষাকর্তা। এই নামটি স্মরণ করলে সব ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
৪০. আল-মুকিত (Al-Muqit)
অর্থ: পালনকর্তা
ফজিলত: আল্লাহ তার সৃষ্টির রক্ষক এবং পালনকর্তা। এই নামটি স্মরণ করলে জীবন সহজ ও সমৃদ্ধ হয়।
অর্থ: যথেষ্ট
ফজিলত: আল্লাহ আমাদের সকলের জন্য যথেষ্ট। এই নামটি স্মরণ করলে আল্লাহর রহমত ও সাহায্য পাওয়া যায়।
৪২. আল-জালিল (Al-Jalil)
অর্থ: মহিমান্বিত
ফজিলত: আল্লাহ মহিমান্বিত এবং তার গৌরব অশেষ। এই নামটি স্মরণ করলে জীবনে সম্মান এবং মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
৪৩ আল-করিম (Al-Karim)
অর্থ: দানশীল, মহত্ত্বপূর্ণ।
ফজিলত: আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু ও দানশীল, যিনি তার সৃষ্টির প্রতি করুণাময়। এই নামটি স্মরণ করলে ব্যক্তির মধ্যে দানশীলতা ও মহত্ব বৃদ্ধি পায়। ব্যক্তির জীবনে একে অপরের প্রতি সহানুভূতি এবং দান করার প্রবণতা গড়ে ওঠে।
৪৪. আল-রাকিব (Ar-Raqib)
অর্থ: প্রহরী, পাহারাদার।
ফজিলত: আল্লাহ সর্বদা আমাদের উপরে নজর রাখেন। জীবনের যেকোনো মুহূর্তে বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এই নামটি স্মরণ করলে বিপদ বা ক্ষতি থেকে বাঁচা যায় এবং আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়।
৪৫. আল-মুজিব (Al-Mujib)
অর্থ: উত্তরদাতা, প্রার্থনা গ্রহণকারী।
ফজিলত: আল্লাহ সব প্রার্থনা শোনেন এবং দ্রুত জবাব দেন। এই নামটি স্মরণ করলে আল্লাহ আপনার দোয়া ও প্রার্থনা শোনেন এবং তা পূর্ণ করেন।
৪৬. আল-ওয়াসি' (Al-Wasi')
অর্থ: বিস্তৃতকারী।
ফজিলত: এই নামের স্মরণে জীবনে নতুন সুযোগ এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি আসে। যেকোনো কাজের জন্য আল্লাহর রহমত ও সহায়তা পাওয়া যায়। এই নামটি স্মরণ করলে জীবনে রিজিক বৃদ্ধি পায় এবং সমস্যা সমাধানে আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়।
৪৭. আল-হাকীম (Al-Hakim)
অর্থ: পরিপূর্ণ জ্ঞানী, বিচক্ষণ।
ফজিলত: জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এই নামটি স্মরণ করলে আল্লাহর হেকমত ও জ্ঞান লাভ করা যায়, যা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই কার্যকরী।
৪৮. আল-ওয়াদুদ (Al-Wadud)
অর্থ: প্রেমময়, স্নেহশীল।
ফজিলত: আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু এবং তার প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যায়। এই নামটি স্মরণ করলে জীবনে প্রেম, স্নেহ ও সহানুভূতির সম্পর্ক স্থাপন হয়। এটি ব্যক্তির জীবনকে শান্তিপূর্ণ ও সুখী করে।
৪৯ আল-মাজিদ (Al-Majid) – মহিমান্বিত
ফজিলত: আল্লাহর গৌরব ও মহিমা অনুভব করা, জীবনে সম্মান ও মর্যাদা পাওয়া। আল্লাহর মহিমার সাথে সম্পর্ক গভীর করা।
৫০ আল-বা’ইস (Al-Ba'ith) – পুনরুত্থানকারী
ফজিলত: মরণোত্তর জীবন ও পুনর্জন্মের বিষয়ে বিশ্বাস ও আশাবাদী হওয়া। আল্লাহ যখন চাইবেন, তখন পৃথিবীতে সব কিছু পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।
৫১ আশ-শাহিদ (Ash-Shahid) – সাক্ষী
ফজিলত: আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং সবকিছুর ওপর সাক্ষী। তিনি আমাদের কাজ, কথা, এবং চিন্তা জানেন। তাঁর সাক্ষী হওয়ার অনুভূতি ও আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।
৫২ আল-হক (Al-Haqq) – পরম সত্য
ফজিলত: আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ সত্য, তাঁর পথে চললে আমরা সবসময় সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকব। সকল মিথ্যা ও জল্পনা-কল্পনা থেকে মুক্তি।
৫৩ আল-ওয়াকিল (Al-Wakil) – অভিভাবক
ফজিলত: আল্লাহ আমাদের অভিভাবক, আমরা যেকোনো সমস্যায় আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলে, তিনি আমাদের সাহায্য করবেন। তাঁর উপর আস্থা রেখে সমস্ত কাজ করে যাওয়া।
৫৪ আল-কাওয়ী (Al-Qawiyy) – শক্তিশালী
ফজিলত: আল্লাহ অত্যন্ত শক্তিশালী, আমাদের সকল কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের শক্তি তিনি দান করেন। আমাদের শক্তি ও দৃঢ়তা তাঁর সাহায্যে বৃদ্ধি পায়।
৫৫ আল-মাতিন (Al-Matin) – দৃঢ়
ফজিলত: আল্লাহ অত্যন্ত দৃঢ়, আমাদের বিশ্বাস ও কাজেও দৃঢ়তা আনে। যখন আমরা আল্লাহর সাহায্য চাই, তখন তিনি আমাদের জন্য সবকিছু শক্তিশালী ও দৃঢ় করে দেন।
৫৬ আল-ওয়ালিয়্য (Al-Waliyy) – সহায়ক
ফজিলত: আল্লাহ আমাদের সাহায্যকারী এবং অভিভাবক। তিনি আমাদের সকল বিপদে, সংকটে এবং প্রতিকূল অবস্থায় আমাদের সাহায্য করেন। তাঁর সাহায্য পাওয়া আমাদের আত্মবিশ্বাস এবং শক্তি বৃদ্ধি করে।
৫৭ আল-হামিদ (Al-Hamid) – প্রশংসার যোগ্য
ফজিলত: আল্লাহ সর্বদাই প্রশংসার যোগ্য, তাঁর সমস্ত গুণাবলি শ্রেষ্ঠ। মানুষ যখন আল্লাহকে প্রশংসা ও শোকর করে, তখন তার জীবনে সৌভাগ্য এবং কল্যাণ আসে। আল্লাহর প্রশংসা আমাদের হৃদয়ে শান্তি আনে।
৫৮ আল-মুহসি (Al-Muhsi) – সবকিছুর গণনাকারী
ফজিলত: আল্লাহ সব কিছু জানেন এবং সমস্ত কাজের হিসাব রাখেন। এই নামের মাধ্যমে মানুষ নিজের আমল ও কর্মের হিসাব রাখার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে এবং পুণ্যের পথে চলার তাগিদ পায়।
৫৯ আল-মুবদি' (Al-Mubdi') – সৃষ্টিকর্তা
ফজিলত: আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টি শুরু করেছেন। এই নামের মাধ্যমে আমরা তাঁর সৃষ্টির প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা অনুভব করতে পারি, এবং সৃষ্টি ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি আমাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়।
৬০ আল-মুইদ (Al-Mu'id) – পুনরুজ্জীবনকারী
ফজিলত: আল্লাহ মৃতদের জীবন দানকারী। তিনি মৃত্যুর পর পুনরুত্থান করবেন এবং আমাদের আমলের ভিত্তিতে বিচার করবেন। এই নামের মাধ্যমে মানুষ মৃত্যুর পরের জীবনের গুরুত্ব এবং আল্লাহর অপরিসীম ক্ষমতা উপলব্ধি করতে পারে।
৬১ আল-মুহয়ি (Al-Muhyi) – জীবনদাতা
ফজিলত: আল্লাহ জীবনের স্রষ্টা এবং জীবনের প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার শক্তি দানকারী। তিনি মানুষকে প্রাণ এবং শক্তি দান করেন, এবং সমস্ত জীবের রক্ষা করেন।
৬২ আল-মুমিত (Al-Mumit) – মৃত্যুদাতা
ফজিলত: আল্লাহ মৃত্যুর মালিক। তিনি যাকে চান তাকে জীবন দেন এবং যাকে চান তাকে মৃত্যু দেন। এই নামের মাধ্যমে মানুষ মৃত্যুর বাস্তবতা এবং আল্লাহর মহিমাকে উপলব্ধি করতে পারে।
৬৩ আল-হাইয়্য (Al-Hayy) – চিরঞ্জীব
ফজিলত: আল্লাহ চিরকাল বেঁচে থাকা, তার মৃত্যু নেই। এই নামের মাধ্যমে মানুষ জীবনের সত্যিকারের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কে সচেতন হতে পারে এবং আল্লাহর চিরস্থায়ী জীবনের প্রতি বিশ্বাস গভীর করতে পারে।
৬৪ আল-কাইয়্যুম (Al-Qayyum) – চিরস্থায়ী
ফজিলত: আল্লাহ একমাত্র যে চিরকাল স্থিতিশীল ও অস্তিত্বশীল। সবকিছু তাঁর ওপর নির্ভরশীল, এবং তিনি কোন অবস্থাতেই ধ্বংস বা পরিবর্তিত হন না। আল্লাহর এই নাম আমাদের স্থিতিশীলতা ও আত্মবিশ্বাসের উৎস।
৬৫ আল-ওয়াজিদ (Al-Wajid) – অস্তিত্বশীল
ফজিলত: আল্লাহ সবকিছুতে উপস্থিত। তাঁর অস্তিত্ব সবার কাছে উপলব্ধি করা উচিত। মানুষ যখন এই নামটি জপ করে, তখন তার বিশ্বাস শক্তিশালী হয় এবং আল্লাহর অশেষ রহমত লাভের আশা জাগ্রত হয়।
৬৬ আল-মাজিদ (Al-Majid) – মহিমান্বিত
ফজিলত: আল্লাহ সর্বাধিক মহিমান্বিত। তাঁর গৌরব, ক্ষমতা এবং শ্রেষ্ঠত্ব আমাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও প্রেরণা জোগায়। এই নামের ফজিলত হলো আল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাঁর মহিমাকে হৃদয়ে ধারণ করা।
৬৭ আল-ওয়াহিদ (Al-Wahid) – একক
ফজিলত: আল্লাহ একমাত্র, তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। এই নামের মাধ্যমে আমাদের মনে একত্ববাদ ও আল্লাহর একত্বের অনুভূতি প্রবৃদ্ধি হয়।
৬৮ আল-আহাদ (Al-Ahad) – একক
ফজিলত: আল্লাহ এক, তিনি একমাত্র। এই নামের মাধ্যমে মানুষ সৃষ্টিকর্তার একত্বে বিশ্বাস এবং তাঁর একত্বের প্রতি সঁপে দিতে পারে।
৬৯ আস-সামাদ (As-Samad) – পরম নির্ভরযোগ্য
ফজিলত: আল্লাহ পরম নির্ভরযোগ্য, তাঁর কাছে সব কিছু প্রাপ্তি সম্ভব। যখন মানুষ আল্লাহর কাছে তার সকল চাহিদা সঁপে দেয়, তখন তিনি তাকে পরিপূর্ণ সাহায্য দেন।
৭০ আল-কাদির (Al-Qadir) – সর্বশক্তিমান
ফজিলত: আল্লাহ সবকিছু করার ক্ষমতা রাখেন। তিনি সর্বশক্তিমান, এবং তাঁর ক্ষমতার সামনে পৃথিবীর সকল শক্তি অক্ষম। তাঁর কাছে কোন কিছুই অসম্ভব নয়।
৭১ আল-মুকাদ্দির (Al-Muqtadir) – পরম ক্ষমতাশালী
ফজিলত: আল্লাহ সর্বশক্তিমান এবং তাঁর কাছে সমস্ত কিছু তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। তিনি সবকিছু পরিচালনা করতে সক্ষম। এই নামের মাধ্যমে মানুষের মনে আত্মবিশ্বাস জন্মায় যে, আল্লাহর কাছে সকল কাজের সফলতা নির্ভর করে এবং তাঁর ইচ্ছায় সকল কিছু ঘটে।
৭২ আল-মুকাদ্দিম (Al-Muqaddim) – অগ্রদাতা
ফজিলত: আল্লাহ যাকে চান তাকে এগিয়ে দেন এবং যাকে চান তাকে সম্মান ও স্থান প্রদান করেন। তিনি আমাদের জীবন ও কাজে অগ্রগতির উৎস। তাঁর এই নামের মাধ্যমে আমরা জীবনে সফলতা ও অগ্রগতির আশায় থাকি।
৭৩ আল-মুআখির (Al-Mu'akhkhir) – পিছনে রাখা
ফজিলত: আল্লাহ যাকে চান তাকে পিছনে রেখে দেন এবং যাকে চান তাকে এগিয়ে দেন। এটি জানিয়ে দেয় যে, আমাদের জীবনের সময় ও ঘটনা আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল এবং তাঁর বিচারই সর্বশেষ।
৭৪ আল-আউয়াল (Al-Awwal) – প্রথম
ফজিলত: আল্লাহ সব কিছুর প্রারম্ভ, সবকিছুর শুরু। তাঁর এই নামের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, আল্লাহর সৃষ্টির শুরু থেকে সবকিছু তাঁর অনুগ্রহে সৃষ্টি হয়েছে এবং তাঁর ইচ্ছায় শুরু হয়েছে।
৭৫ আল-আখির (Al-Akhir) – শেষ
ফজিলত: আল্লাহ সব কিছুর শেষ, সবকিছুর পরিণতি। তাঁর এই নামের মাধ্যমে আমরা মনে রাখি যে, আমাদের জীবনের এবং এই পৃথিবীর শেষ তাঁর ইচ্ছায় নির্ধারিত। আল্লাহর একমাত্র ক্ষমতার কাছে সকল কিছু শেষ হবে।
৭৬ আয-জাহির (Az-Zahir) – প্রকাশিত
ফজিলত: আল্লাহ প্রকাশ্য, তিনি নিজের উপস্থিতি ও ক্ষমতা প্রকাশ করেন। পৃথিবীর সমস্ত সৃষ্টি তাঁর অশেষ শক্তির প্রকাশ। এই নামের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর প্রকাশ্য উপস্থিতি অনুভব করি এবং তাঁর মহিমা মেনে চলার চেষ্টা করি।
৭৭ আল-বাদিন (Al-Batin) – অদৃশ্য
ফজিলত: আল্লাহর অদৃশ্য দিক, যা আমাদের চোখের জন্য অদৃশ্য কিন্তু যার উপস্থিতি আমাদের হৃদয়ে অনুভব করা যায়। তাঁর এই নামের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, তিনি সমস্ত কিছুর গভীরে আছেন এবং তাঁর রহমত সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে।
৭৮ আল-ওয়ালি (Al-Wali) – অভিভাবক
ফজিলত: আল্লাহ আমাদের অভিভাবক, তিনি আমাদের রক্ষা করেন এবং আমাদের জীবনের সমস্ত পরিস্থিতিতে আমাদের সহায়ক। এই নামের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নিরাপত্তা এবং সাহায্য অনুভব করতে পারি।
৭৯ আল-মুতা'আলি (Al-Muta'ali) – সর্বোচ্চ
ফজিলত: আল্লাহ একমাত্র সর্বোচ্চ, তাঁর কোনও তুলনা নেই। তিনি সমস্ত সৃষ্টি ও জগতের ওপর শাসনকারী। এই নামের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর উচ্চতা এবং মহানত্ব অনুভব করি এবং আমাদের বিশ্বাস আরো দৃঢ় হয়।
৮০ আল-বার (Al-Barr) – অনুগ্রহশীল
ফজিলত: আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু এবং তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি অনুগ্রহ ও করুণায় পরিপূর্ণ। এই নামের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর অনুগ্রহের প্রতি কৃতজ্ঞতা অনুভব করি এবং তাঁর কল্যাণে শামিল হতে চাই।
৮১ আত-তাওয়াব (At-Tawwab) – তওবা গ্রহণকারী
ফজিলত: আল্লাহ তওবা গ্রহণকারী, তিনি তাঁর বান্দাদের তওবা আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেন এবং তাদের ভুল-ভ্রান্তি মাফ করেন। তাঁর কাছে সব গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব, যদি তওবা সঠিকভাবে করা হয়। এই নামের মাধ্যমে আমরা মনে রাখি যে, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে আমাদের জীবন পুনরুদ্ধার হতে পারে।
৮২ আল-মুনতাকিম (Al-Muntaqim) – প্রতিশোধ গ্রহণকারী
ফজিলত: আল্লাহ তাঁর প্রতিপালিত বান্দাদের বিরুদ্ধে অন্যায় করার জন্য অত্যন্ত কঠোর। তাঁর এই নামের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, আল্লাহ তার ন্যায়বিচারের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করেন এবং কোন অপকর্মের শাস্তি অবশ্যই আসবে।
৮৩ আল-আফুউ (Al-Afuww) – ক্ষমাশীল
ফজিলত: আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, তিনি তাঁর বান্দাদের অপরাধ ক্ষমা করেন যদি তারা তাঁর কাছে তওবা করে। তাঁর এই নামের মাধ্যমে আমরা জানি যে, আল্লাহ আমাদের ভুল-ভ্রান্তি মাফ করে দেন যদি আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করি।
৮৪ আর-রউফ (Ar-Ra'uf) – অতিশয় দয়ালু
ফজিলত: আল্লাহ সর্বাধিক দয়ালু, তিনি আমাদের প্রতি একান্ত দয়া প্রদর্শন করেন। তাঁর এই নামের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর দয়ার প্রতি আশা রাখি এবং তাঁর দয়ার মাধ্যমে শান্তি ও প্রশান্তি লাভ করতে চাই।
ফজিলত: আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টির রাজা, সব কিছু তাঁর মালিকানাধীন। তিনি সকল কিছু পরিচালনা করেন এবং তাঁর রাজ্যেই সমস্ত কিছু আছে। এই নামের মাধ্যমে আমরা জানি যে, আল্লাহর রাজত্বে সমস্ত শক্তি এবং অধিকার রয়েছে এবং তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী পৃথিবী চলমান।
৮৬ যুল-জালাল ওয়া আল-ইকরাম (Dhul-Jalal wal-Ikram) – মহিমা ও সম্মানের অধিকারী
ফজিলত: আল্লাহ মহিমা ও সম্মানের অধিকারী, তাঁর সম্মান পৃথিবীর সমস্ত কিছু থেকে উচ্চ। তিনি সবার থেকে বড় এবং তাঁর ইচ্ছা ছাড়া কিছু ঘটে না। এই নামের মাধ্যমে আমরা জানি যে, আল্লাহর মহিমা ও সম্মান চিরকাল অটুট এবং এর কাছে পৃথিবীর সকল সম্মান তুচ্ছ।
৮৭ আল-মুকসিত (Al-Muqsit) – সুবিচারক
ফজিলত: আল্লাহ সুবিচারক, তিনি সবার জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর কাছে সব পক্ষের অধিকার সমানভাবে বিচারিত হয়। এই নামের মাধ্যমে আমরা বিশ্বাস করি যে, আল্লাহ আমাদের জীবনে ন্যায় এবং সুবিচার প্রতিষ্ঠিত করবেন।
৮৮ আল-জামি’ (Al-Jami') – একত্রিতকারী
ফজিলত: আল্লাহ সমস্ত কিছু একত্রিত করেন, তিনি সমস্ত সৃষ্টি ও অবস্থাকে একত্রিত করেন এবং কিয়ামতের দিন সবকিছু পুনরুদ্ধার করবেন। এই নামের মাধ্যমে আমরা জানি যে, আল্লাহ সবকিছুকে একত্রিত করার ক্ষমতা রাখেন।
৮৯ আল-গানী (Al-Ghani) – অমুখাপেক্ষী
ফজিলত: আল্লাহ একমাত্র অমুখাপেক্ষী, তিনি কোনো কিছুতেই দরিদ্র নন। তাঁর কাছে সমস্ত সম্পদ এবং ক্ষমতা রয়েছে। এই নামের মাধ্যমে আমরা বুঝি যে, আল্লাহ সবকিছুর মালিক এবং কোনো কিছু তার ওপর নির্ভরশীল নয়।
৯০ আল-মুগনী (Al-Mughni) – অভাবমুক্তকারী
ফজিলত: আল্লাহ আমাদের সকল প্রকার অভাব ও দুর্দশা থেকে মুক্তি দেন। তাঁর এই নামের মাধ্যমে আমরা জানি যে, আল্লাহ আমাদের দানশীলতা ও প্রশস্ততার মাধ্যমে সকল অভাব থেকে মুক্তি দেন।
৯১ আল-মানি' (Al-Mani') – বাধা দানকারী
ফজিলত: আল্লাহ যাকে ইচ্ছে দেন এবং যাকে ইচ্ছে করেন থেকে নেন। তিনি যে কিছু দেবেন না বা কোনো কিছু বন্ধ করে দেবেন, সেটাও তাঁর ইচ্ছা। তাঁর এই নামের মাধ্যমে আমরা জানি যে, আল্লাহ মানুষের জীবনে বিভিন্ন বাধা সৃষ্টি করতে পারেন, তবে সেই বাধার পেছনে আল্লাহর কোনো মহান উদ্দেশ্য থাকে।
৯২ আদ-দার (Ad-Darr) – ক্ষতিসাধনকারী
ফজিলত: আল্লাহ সকল দুঃখ, কষ্ট, রোগ ও বিপদ দেন, তবে সেই বিপদ মানুষের জন্য পরীক্ষার অংশ। আল্লাহর এই নামের মাধ্যমে আমরা জানি যে, আল্লাহ জীবনে যেকোনো ক্ষতি বা দুঃখ পাঠান, তা আমাদের জন্য উপকারিতা বা শিক্ষার জন্য হতে পারে।
৯৩ আন-নাফি' (An-Nafi') – কল্যাণকারী
ফজিলত: আল্লাহ মানুষকে কল্যাণ প্রদান করেন। তিনি যা চান, তা প্রদান করেন এবং মানুষের জীবনে ভালো কাজ তৈরি করেন। তাঁর এই নামের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, আল্লাহ সবসময় আমাদের জন্য কল্যাণের ব্যবস্থা করেন।
৯৪ আন-নূর (An-Nur) – আলোক
ফজিলত: আল্লাহ হচ্ছেন আলোর উৎস। তিনি বিশ্বকে আলোকিত করেছেন এবং মানুষের অন্তরেও আলোর দান করেন। আল্লাহর এই নামের মাধ্যমে আমরা জানি যে, আল্লাহ আমাদের হৃদয়ে ইমানের আলো প্রদান করেন এবং তাঁর দিকনির্দেশনায় জীবন আলোকিত হয়ে উঠে।
৯৫ আল-হাদি (Al-Hadi) – পথপ্রদর্শক
ফজিলত: আল্লাহ সঠিক পথ দেখান। যিনি পথভ্রষ্ট, আল্লাহ তাকে সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন। তাঁর এই নামের মাধ্যমে আমরা জানি যে, আল্লাহ মানুষের অন্তরে সত্যের পরিচয় তুলে দেন এবং পথপ্রদর্শন করেন।
৯৬ আল-বদি' (Al-Badi') – অনন্য সৃষ্টিকর্তা
ফজিলত: আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টি এবং পৃথিবী এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যা এর কোনো তুলনা নেই। তিনি সৃষ্টির মূল ও অপ্রতিম। এই নামের মাধ্যমে আমরা জানি যে, আল্লাহর সৃষ্টি অতুলনীয় এবং অদ্বিতীয়।
৯৭ আল-বাকী (Al-Baqi) – অনন্ত
ফজিলত: আল্লাহ চিরস্থায়ী এবং অনন্ত, তাঁর কোনো শেষ নেই। পৃথিবী ও জগতের সব কিছু শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু আল্লাহ চিরকাল অটুট থাকবেন। তাঁর এই নামের মাধ্যমে আমরা জানি যে, আল্লাহ জীবন, মৃত্যুর পরেও থাকবেন, এবং আমরা তাঁর কাছে অনন্ত শান্তি ও নিরাপত্তা খুঁজে পাবো।
৯৮ আল-ওয়ারিস (Al-Warith) – উত্তরাধিকারী
ফজিলত: আল্লাহ হচ্ছেন সবকিছুর উত্তরাধিকারী। পৃথিবী এবং পৃথিবীর সমস্ত সম্পত্তি আল্লাহর মালিকানাধীন। এই নামের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, আল্লাহই সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন এবং সকল জিনিস তাঁরই।
৯৯ আর-রশিদ (Ar-Rashid) – সঠিক পথ প্রদর্শক
ফজিলত: আল্লাহ সঠিক পথের দিকে পরিচালনা করেন এবং সবকিছু সঠিকভাবে স্থাপন করেন। তিনি পথভ্রষ্টদের সঠিক পথের দিশা দেখান। এই নামের মাধ্যমে আমরা জানি যে, আল্লাহ আমাদের সঠিক পথের দিশা দেন এবং তাকে অনুসরণ করা আমাদের দায়িত্ব।
শেষ কথাঃ উপসংহার
আল্লাহর ৯৯টি নাম, যা "আসমা-উল-হুসনা" নামে পরিচিত, ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতিটি নাম আল্লাহর বিশেষ গুণাবলি, ক্ষমতা এবং মহিমাকে প্রকাশ করে। প্রতিদিন এই নামগুলো স্মরণ ও জপ করা একজন মুমিনের ঈমান ও আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি নামের বাংলা অর্থ এবং তার ফজিলত (বরকত) সম্পর্কে বিস্তারিত জানলে মুসলিমরা আল্লাহর গুণাবলিকে আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারেন।
এই নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। উক্ত আর্টিকেলটি এতক্ষণ পড়ে আমাদের পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url